ডিজিটাল মার্কেটিং বর্তমান সময়ে সবচেয়ে আলোচিত পেশাগুলোর মধ্যে একটি। অনলাইনের জনপ্রিয়তার এই যুগে কোম্পানিগুলো তাদের পণ্যের প্রচারণার জন্য ডিজিটাল প্লাটফর্মকে পছন্দ করে। কেননা প্রথাগত মাকেটিং থেকে বেশি আউটপুট পাওয়া যায় এতে। ফলে এই খাতে চাকরির নতুন বাজার সৃষ্টি হচ্ছে। তাই টেক কাল্টে নতুন একটি সিরিজ শুরু হতে যাচ্ছে ডিজিটাল মাকেটিং নিয়ে। এই সিরিজটি লিখবেন শাহ শাইফুল্লাহ আল জাকারিন। তিনি ডিজিটাল মাকেটার হিসেবে দেশের সুপরিচিত একটি এজেন্সীতে কর্মরত আছেন।

এই সিরিজ লেখার আগে লেখক চিন্তা ভাবনা তুলে ধরছি। শাহ শাইফুল্লাহ আল জাকারিন লিখেন,  গত বুধবারে হোম কোয়ারেন্টাইনের এই দিনগুলোকে কিভাবে কাজে লাগানো যায় তা নিয়ে ভাবতে গিয়ে মনে হলো ডিজিটাল নিয়ে অল্প স্বল্প যা জানি তা এই সেক্টরের নতুনদের সাথে শেয়ার করতে পারি। এই লেখার বিভিন্ন ভুল ভ্রান্তি নিয়ে এই সেক্টরের অভিজ্ঞরাও কমেন্টে আলোচনা করতে পারি। এটি দ্বিতীয় পর্ব। প্রথম পর্ব ডিজিটাল মার্কেটিং (পর্ব ১) – ডিজিটাল মিডিয়ার বেসিক ধারণা এই ঠিকানা থেকে পড়ে নিতে পারেন।

দ্বিতীয় পর্বে বিভিন্ন রকম ডিজিটাল বিজ্ঞাপন এবং এই বিজ্ঞাপনগুলোর বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

একসময়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় প্রচুর বিলবোর্ড দেখা যেতো। কখনো ভেবেছেন এই বিলবোর্ড কোন ধরণের স্থানে বসানো হয়? কখনো কি ভেবেছেন মহাসড়কের পাশে হুট করে বড় বড় বিলবোর্ড কেন বসানো হয়? লক্ষ্য করলেই দেখবেন, এই বিলবোর্ডগুলো সাধারণত কোন শহরের কেন্দ্রস্থলে যেখানে অনেক জনসমাগম হয়, কিংবা কোন বাজারে কিংবা বাস অথবা ফেরীঘাটে এই বিলবোর্ডগুলো বসানো হয় যাতে একটি জায়গায় বিলবোর্ড থাকলেও অনেক মানুষ একসাথে আপনার বিজ্ঞাপন দেখতে পারে। আবার ব্যাস্ততম মহাসড়কের পাশে কোন বাজার কিংবা লোকালয় না থাকলেও বিলবোর্ড বসানো হয় যাতে এই মহাসড়ক দিয়ে চলাচলরত যাত্রীরা আপনার বিজ্ঞাপন দেখতে পারে।

ডিজিটাল মিডিয়াতেও আমরা একই ফর্মূলা ব্যবহার করি। যেখানেই জনসমাগম হয় সেখানেই বিজ্ঞাপনের সুযোগ চলে আসে। ঠিক এই কারণেই ফেসবুকের মতো সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহারকারী বৃদ্ধির সাথে সাথেই বিজ্ঞাপন দাতাদের দ্রুত আগমন ঘটতে থাকে। যে কোন টিভি চ্যানেলের সাথে পাল্লা দিয়ে তৈরী হয় ইউটিউবের বিজ্ঞাপন জগত।

ডিজিটাল মিডিয়ায় বিভিন্ন রকম বিজ্ঞাপনের সুযোগ থাকলেও বেশিরভাগ বিজ্ঞাপন দাতাই মূলত ফেসবুক এবং গুগল কেন্দ্রিক। এছাড়াও আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত আরো কিছু এড নেটওয়ার্ক রয়েছে। বাংলাদেশের মার্কেটে মূলত ফেসবুক, গুগল (ইউটিউব গুগলের অংশ হওয়াতে আলাদাভাবে উল্লেখ করা হচ্ছে না), এস্কিমি এড নেটওয়ার্ক, উইজার্ড, এড প্লে এই প্ল্যাটফর্ম গুলো বেশি ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও জনপ্রিয় পত্রিকাগুলোর অনলাইন ভার্সনেও বিজ্ঞাপন দেয়া হয়।

ডিজিটাল মিডিয়ার সকল বিজ্ঞাপন স্বাধারণত দুইটি অংশে বিভক্ত

১। ডিসপ্লে প্লেসমেন্ট: 
এই অংশে রিচ মিডিয়া, ফেসবুক স্ট্যাটিক সহ আরো কয়েকটি ভাগ রয়েছে যা নিয়ে এই অধ্যায়েই বিস্তারিত আলোচনা হবে।

২। ভিডিও প্লেসমেন্ট :
এছাড়াও আরো একটি জনপ্রিয় এড প্লেসমেন্ট হলো সার্চ এড যা মূলত গুগোল সার্চ ইঞ্জিনের জন্য ব্যবহৃত হয়। ডিসপ্লে প্লেসমেন্টের আলোচনার অংশেই এইটা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

ব্যানার প্লেসমেন্টঃ
উদাহরণের জন্য Kalerkontho.com এ ভিজিট করলেই আপনি দেখবেন খবরের আর্টিকেল কিংবা শিরোনামের বিভিন্ন পাশে বিভিন্ন সাইজের ব্যানারের মতো করে বিজ্ঞাপন আছে। এইগুলোই মূলত ডিসপ্লে (ব্যানার) প্লেসমেন্ট। এই ব্যানারগুলো সাধারণ স্ট্যাটিক (জাস্ট ছবির মতো কোন মুভমেন্ট নেই) কিংবা এনিমেটেড হতে পারে।

banner-add-digital-markting-techcult

ডিসপ্লে প্লেসমেন্ট

ডিসপ্লে প্লেসমেন্ট হলো ডিজিটালের পূরনতম বিজ্ঞাপনের ধারা। এই ডিসপ্লে প্লেসমেন্টকে আপনি বিলবোর্ডের সাথে তুলনা করতে পারেন। পার্থক্য একটা জায়গাতেই, আপনি যদি শহরের ব্যস্ততম রাস্তায় বিলবোর্ড ব্যবহার করেন তাহলে সবাই ঐ বিলবোর্ড দেখতে পারবে কিন্তু ডিজিটালে কোন ব্যস্ত প্ল্যাটফর্মে আপনি যখন কোন ডিসপ্লে ক্যাম্পেইন করবেন তখন আপনি ইচ্ছা করলেই, ছেলে কিংবা মেয়ে, বয়স্ক কিংবা তরুণ এই রকম বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে যাদেরকে এডটি দেখাতে চান তাদেরই দেখাতে পারবেন।

ধরেন আপনি চাচ্ছেন যাদের বয়স ১৮ থেকে ৩৫ এর মধ্যে, যারা ঢাকায় থাকে এবং যারা খেতে পছন্দ করে তাদেরকেই আপনার রেস্টুরেন্টের ডিসপ্লে এড দেখাবেন। এখন এই ধরণের অডিয়েন্স হাজার হাজার ওয়েবসাইট প্রতিদিন ভিজিট করেন, প্রতিটা ওয়েবসাইটে গিয়ে আলাদা ভাবে আপনার ডিসপ্লে বিজ্ঞাপন চালানো সম্ভব না। আরো সহজ ভাবে বললে ঢাকায় থাকে, বয়স ২৭, খেতে পছন্দ করে এমন একজন তরুণ জার্মানির কোন ওয়েবসাইট ভিজিট করছে, তাকে ডিসপ্লে বিজ্ঞাপন দেখাতে হলে আপনাকে জার্মানির সেই ওয়েবসাইটের ম্যানেজমেন্টের সাথে যোগাযোগ করে সেইখানে ডিসপ্লে বিজ্ঞাপন দিতে হবে যা অসম্ভব।

এই অসম্ভবকে সম্ভব করার জন্যেই বিভিন্ন রকম এড নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছে। এই এড নেটওয়ার্কসমূহ অনেকটা জালের মতো । তাদের নেটওয়ার্কে সেই জার্মানির ওয়েবসাইট বলেন কিংবা বাংলাদেশের কোন ছোট একটি ওয়েবসাইট বলেন সবই কানেক্টেড থাকে। আপনি সেই এড নেটওয়ার্কে ডিসপ্লে ক্যাম্পেইন সেট আপ করলে সেই এড নেটওয়ার্ক তার কানেক্টেড ওয়েবসাইটের যেখানেই আপনার টার্গেট গ্রুপের অডিয়েন্সকে পাবে সেইখানেই আপনার বিজ্ঞাপন দেখাবে। গুগোল এড নেটওয়ার্ক (সংক্ষেপে জিডিএন) সবচেয়ে বড় এড নেটওয়ার্ক। এছাড়াও সারা পৃথিবীতে এমন আরো অনেক এড নেটওয়ার্ক আছে। আমাদের বাংলাদেশে জিডিএনের পাশাপাশি বহুল ব্যবহৃত এড নেটওয়ার্ক হলো এস্কিমি, এডপ্লে ইত্যাদি।

আবার অনেকসময় prothomalo.com এর মতো বড় ওয়েবসাইট যাদের নিজেদের অনেক ভিজিটর বা ট্রাফিক আছে তারা সরাসরি নিজেরাও ডিসপ্লে ক্যাম্পেইনের জন্য তাদের ওয়েবসাইট কিংবা এপের প্লেসমেন্ট বিক্রি করে।

gdn-add-digital-markting-techcult

কিভাবে বুঝবেন যে বিজ্ঞাপনটি জিডিএন থেকে আসা কি না? উপরের বিজ্ঞাপনটি ভালো করে লক্ষ্য করুন, ডান পাশে কর্ণারে ক্রস চিহ্নের পাশে আরো একটি চিহ্ন পাবেন, এর উপরে মাউস ধরলেই বিজ্ঞাপনটিতে লেখা আসবে Ads by google/ google দ্বারা বিজ্ঞাপন। একইভাবে স্বাধারনত অন্য এড নেটওয়ার্কদের ক্ষেত্রে তাদের নাম চলে আসে।

ই-কমার্স কোম্পানীদের জন্য তাদের ২০/৩০ হাজার কিংবা ১ লাখ প্রোডাক্টের জন্য প্রতিটার মূল্যসহ ডিসপ্লে ব্যানার চালানো অনেক কঠিন। তারা মূলত ডায়নামিক ডিসপ্লে এড ব্যবহার করেন যা মূলত ই-কমার্স ওয়েবসাইটের সার্ভার থেকে পণ্যের ছবি এবং বিভিন্ন তথ্য নিয়ে আপনার আগ্রহের সাথে মিলিয়ে ডিসপ্লে এড দেখায়।

এই অংশটি লেখার আগে গ্রোসারী আইটেম কেনার জন্য chaldal.com ভিজিট করেছিলাম এবং সাভাবিকভাবেই আমার আগ্রহের সাথে মিলিয়ে তাদের ডায়নামিক ডিসপ্লে এড আমাকে ফলো করছে।
আবার কিছু ডিসপ্লে এড দেখবেন যে ব্যনার গুলোতে আপনি সরাসরি বিভিন্নভাবে এংগেজ করতে পারবেন। আবার কিছু ডিসপ্লে এড পাবেন যেইটাতে সরাসরি বিভিন্ন রকম তথ্য আপডেট পাবেন, এই ধরণের এংগেজিং কিংবা অটো আপডেট হওয়া ডিসপ্লে এডগুলোকে প্রোগ্র্যামেটিক ব্যানার বলে। অনেক প্ল্যাটফর্মে এই ব্যানারগুলোকে রিচ মিডিয়া বলা হয়।

onlineshop-add-digital-markting-techcult

এই ছবিতে দেখানো ডিসপ্লে প্লেসমেন্টটা ব্যবহার করেছিলো টেলকো কোম্পানী রবি। বাংলাদেশ বনাম নিউজিল্যান্ডের মধ্যেকার একটি ও ডি আই ম্যাচ চলার সময়ে এই ডিসপ্লে ব্যানারে লাইভ স্কোর দেখানো হচ্ছিলো, এইটা এক ধরণের রিচ মিডিয়া ডিসপ্লে এড। এড নেটওয়ার্ক এস্কিমির মাধ্যমে এই ক্যাম্পেইনটি চালানো হয়।

telco-add-digital-markting-techcult

স্বাধারনত একই রকমের ডিসপ্লে এড দেখতে দেখতে অডিয়েন্সের যাতে একঘেয়ে না লাগে তাই এই ধরণের রিচ মিডিয়া ব্যবহার করা হয়। এই রকমের ইন্টারএকটিভ ডিসপ্লে ক্যাম্পেইনে অডিয়েন্সের এঙ্গগেজমেন্ট বেশি থাকে।

এই মুহূর্তে পৃথিবীতে রাজত্ব করছে জিডিএন, সামনে হয়তো নতুন কিছু আসবে কিন্তু এইটুকু নিশ্চিত আগামী ৫/৬ বছর ডিজিটাল জগতে ক্যারিয়ার গড়তে হলে আপনাকে গুগোল এড নেটওয়ার্কের অনেক কিছুই জানতে হবে। সেই কারণের সার্চ এডের আলোচনা করা দরকার।

আপনি যখন গুগোলে কোন কিছু লেখে সার্চ দেন, বেশিরভাগ সময়ই সার্চ রেজাল্টের সাথে সাথে সার্চ রেজাল্টের সবার উপরে গুগোল একধরণের বিজ্ঞাপন দেয়।

search-add-digital-markting-techcult

আমি “Online shopping bd” লেখে সার্চ দেয়া মাত্রই সার্চ রেজাল্টের সাথে সাথে সবার উপরে daraz.com.bd চলে আসলো। একটু ভালো করে লক্ষ্য করলে দেখবেন দাড়াজের ওয়েব এড্রেসের বাম পাশেই “Ad” লেখা বক্সের ভেতরে। এইটাই সার্চ এড। স্বাধারণত কোন কি-ওয়ার্ড দিয়ে কোন ওয়েবসাইট বা ব্র্যান্ড যখন সার্চের টপে আসে না তখন মূলত সার্চ এড দিয়ে টপে আসা হয়।

ভিডিও প্লেসমেন্ট

ইউটিউবে হয়তো কোন একটা ভিডিওকে ক্লিক করেছেন ভিডিওটা দেখার জন্য, ভিডিও শুরু হবার পূর্বেই ৬ সেকেন্ডের আর একটি ভিডিও বিজ্ঞাপন চলে আসে অনেকসময়। আপনি চাইলেও এই ভিডিওকে স্কিপ করতে পারবেন না। অথবা ফেসবুকে একটা ভিডিও দেখছেন এর মাঝেই কোন একটি ভিডিও বিজ্ঞাপন চলে আসে যা কোনভাবেই স্কিপ করা যায় না।

এই রকম আরো অনেক রকম ভিডিও প্লেসমেন্ট ডিজিটালে পাবেন। আপনি ভিডিওতে যে ভাবে অডিয়েন্সকে এংগেজ করতে পারবেন তা আর কোন মাধ্যমেই পারবেন না আর তাই ভিডিও প্লেসমেন্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। স্বাধারনত ফেসবুকে এবং গুগোল এড নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ইউটিউবে ভিডিও এড দেয়া হয়। আরো কয়েকটি ভিডিও প্লেসমেন্ট এড প্ল্যাটফর্ম থাকলেও মূলত ফেসবুক এবং ইউটিউব এই বেশি ভিডিও প্লেসমেন্ট বেশি ব্যবহার করা হয়। অধ্যায়ের শুরুতে বলেছিলাম ব্যস্ত এলাকাতেই বিলবোর্ড ব্যবহার করা হয় তেমনি ফেসবুক এবং ইউটিউবেই বাংলাদেশের ট্রাফিক বেশি আর তাই এই দুই প্ল্যাটফর্ম বেশি ব্যবহার করা হয়।

ইউটিউবের অসংখ্য কন্টেন্ট দেখার জন্য প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ ট্রাফিক ইউটিউবে আসছে। বেশিরভাগ সময় আপনার পছন্দের ভিডিওটি শুরু হবার পূর্বেই ৬ সেকেন্ডের ভিডিও বিজ্ঞাপন চলে আসে, আপনি চাইলেও এই ৬ সেকেন্ডের বিজ্ঞাপনকে স্কিপ করতে পারবেন না। এই বিজ্ঞাপনকে বলে বাম্পার এড। আবার ভিডিওএর মাঝেও কিছু বিজ্ঞাপন চলে আসে যা চাইলে আপনি স্কিপ করতে পারবেন কিংবা বিজ্ঞাপনটি দেখতে পারেন একে বলে ট্রু ভিউ বিজ্ঞাপন। ফেসবুকে ভিডিও এর মাঝে যখন এরকম ভিডিও বিজ্ঞাপন চলে আসে যেইটা স্কিপ করা যায় না, তাকে বলে ইনস্ট্রিম ভিডিও।

এই ভিডিও প্লেসমেন্টগুলো ব্যবহারের জন্য বিভিন্ন নিয়ম অনুসরণ করা হয়। স্বাধারণট ট্রু ভিউ ব্যববহুল কিন্তু একইসাথে লাভজনক। যদি আপনার বিজ্ঞাপনটির দৈর্ঘ্য ১ মিনিট হয় তাহলে ৩০ সেকেন্ড পর্যন্ত কে ভিডিওটি না দেখলে ইউটিউব আপনার কাছে থেকে কোন খরচ নিবে না। অর্থাৎ, ধরেন আপনার বিজ্ঞাপনটি ১ মিনিট লম্বা, এই বিজ্ঞাপনটি দশজন ব্যাক্তির নাটকের মাঝে চলে এসেছে কিন্তু ৭ জনই ১০/১২ সেকেন্ড করে ভিডিওটি স্কিপ করেছে এবং ৩ জন ৩০ সেকেন্ড পর্যন্ত দেখেছে তার মানে ইউটিউব শুধু এই তিনজনের জন্যই আপনার থেকে পেমেন্ট গ্রহণ করবে।

বাকী যে ৭ জন ৩০ সেকেন্ডের আগেই স্কিপ করেছে তাদের ভিডিও ভিউ হিসেবে কাউন্ট না করে ইম্প্রেশন হিসেবে কাউন্ট করবে। এই কারণের ট্রু ভিউ এর কোয়ালিটি স্কোরকে অনেক হাই ধরা হয়, আপনার বিজ্ঞাপনটির ৫ লাখ ভিঊ মানে এই ৫ লাখ মানুষ আপনার বিজ্ঞাপনের ৩০ সেকেন্ড পর্যন্ত মিনিমাম দেখেছে যা টিভি কিংব ফেসবুকের ভিউ রেটের থেকে অনেক বেশি।

এই হাই কোয়ালিটি স্কোরের জন্যেই প্রতিটা ট্রু ভিউ এর রেট বাম্পার এডের থেকে ৪/৬ গুণ বেশি হয়। আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনি কি রকমের ভিডিও ক্যাম্পেইন আপনার ব্র্যান্ডের জন্য ব্যবহার করবেন। ধরা যাক, আপনার ব্র্যান্ডটি ডিজিটালে যথেষ্ট এক্টিভ, আপনার পর্যাপ্ত ব্র্যান্ড এওয়ারনেস আছে। এমন একটি মুহুর্তে আপনি একটি কনজিউমার প্রমোশন চালাবেন।

ধরা যাক, আপনার পণ্য চা-পাতা এবং ২০০ গ্রাম চা-পাতার সাথে আপনি চামচ ফ্রি দিচ্ছেন। সেইক্ষেত্রে ৬ সেকেন্ডের বাম্পার এডের ভেতরেই আপনি পুরো বার্তাটি দিতে পারবেন। আবার যেহেতু বাম্পার এডের খরচ কম এবং চাইলেও আপনার অডিয়েন্স বাম্পার এড স্কিপ করতে পারবে না তাই সবচেয়ে ভালো উপায় হলো বাম্পার এড চালানো। কিন্তু যখন আপনি থিম্যাটিক ক্যাম্পেইন করবেন আপনার ব্র্যান্ডের তখন স্বাধারনত বাম্পার এডে পুরো বার্তাটি আপনি দিতে পারবেন না তাই তখন ট্রু ভিউ ক্যাম্পেইন রান করা ভালো।

আপনি যদি ভেবে থাকেন, এই কয়েক রকমের ভিডিও এড দিয়েই ডিজিটাল জগত তাহলে বিশাল ভুল করবেন। এই ধরণের ভিডিও এডগুলো মূলতা বেসিক কিন্তু আরো বিভিন্ন রকমের ভিডিও এড আছে।

রিওয়ার্ড ভিডিও এড আরো একটি বহুল প্রচলিত ভিডিও এড। মোবাইলে বিভিন্ন গেমসের এপসে গেমস খেলার সময় দেখবেন আপনার কাছে অপশন আসবে, একটি ভিডিও দেখলে আপনি গেমের লাইফ কিংবা অতিরিক্ত পয়েন্ট পাবেন। এই ভিডিও গুলোও মূলত বিভিন্ন রকম বিজ্ঞাপন হয়ে থাকে। এই ভিডিও বিজ্ঞাপনগুলো প্রকারভেদে ৬ থেকে ১০ সেকেন্ড পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। এছাড়াও ভিডিও গেমসে বিভিন্ন রকম ভিডিও এড এবং ব্যানার এড দেয়া যায়। আপনি কি জানেন বাংলাদেশে ৩ কোটিরও বেশি মানুষ ভিডিও গেমস খেলে কিংবা তাদের ফোনে ভিডিও গেমস আছে?

সময়ের সাথে সাথেই ডিজিটাল জগতের ভিডিও বিজ্ঞাপনগুলোর ধরণ পরিবর্তন হবে, পরিবর্তিত হচ্ছেও কিন্তু একজন ডিজিটাল মিডিয়া বায়ার/মার্কেটার হিসেবে আপনাকে সেরা প্ল্যাটফর্মগুলো বেছে নিয়ে দর্শকের কাছে পৌছানোর চেষ্টা করতে হবে।

বন্ধুদের জানিয়ে দেন
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
1 Comment
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

[…] আলোচনা করতে পারি। এটি তৃতীয় পর্ব। প্রথম পর্ব ডিজিটাল মার্কেটিং (পর্ব ১) – ডিজিটাল মিডিয়ার বেসিক ধারণা এই […]