ইন্টারনেট বা অনলাইনের কথা আসলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে আসলে নানান ওয়েবসাইটের চেহারা। ‘থ্রি ডব্লিউ’- এর এ দুনিয়ায় ওয়েবসাইটই হলো প্রধান বিচরণ ক্ষেত্র।

এতসব সাইটে ঘুরে বেড়াতে বেড়াতে আপনার নিজের একটি ওয়েবসাইট তৈরির কথা মনে হতে পারে।চাইলে নিজের কাজ বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য কিংবা ব্যক্তিগত সাইট বা ব্লগ তৈরি করতে পারেন। এ জন্য জানতে হবে ওয়েবসাইট তৈরির কৌশল। আর একটি ওয়েবসাইটের মূলে আছে এইচিএমএল। এটির কথা অনেকে শুনলেও বিষয়টি কি তা পরিস্কার নয়। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতেই এ টিউোরিয়াল।

একটি পূর্ণাঙ্গ ওয়েবসাইট তৈরি করতে এইচটিএমএল, সিএসএস, জাভাস্ক্রিপ্ট, ওয়ার্ডপ্রেসসহ আরও অনেকগুলো বিষয় জানা প্রয়োজন। তবে ওয়েবসাইটের মূলে আছে এইচটিএমএল। অর্থাৎ আপনাকে সবার আগে এইচটিএমএল শিখতে হবে।

পাঠকদের জন্য বেসিক থেকে এইচটিএমএল টিউটোরিয়াল শুরু করা হলো। ধারাবাহিক পর্ব আকারে তা তুলে ধরা হবে।

এইচটিএমএল (HTML) কি?

অনেকেরই ধারণা এইচটিএমএল একটি প্রোগ্রামিং ভাষা। তবে এ ধারণা একেবারেই ভুল। মূলত এটি হলো মার্কআপ ল্যাঙ্গুয়জে। এইচটিএমএলের পুরো নাম হলো: হাইপার টেক্সট মার্কআপ ল্যাঙ্গুয়েজ (Hyper Text Markup Language)

এইচটিএমএল মার্ক আপ ট্যাগগুলো ব্যাবহার করে ওয়েবপেইজের বেসিক কাঠামো তৈরি করা হয়।

এখন প্রশ্ন তৈরি হতে পারে এইচটিএমএলের কোডগুলো দেখলে তো মনে হয় এটি একটি প্রোগ্রামিং ভাষা। তবে কেন এটিকে প্রোগ্রামিং ভাষা বলা হয় না।

ফটো ক্রেডিট -pixabay

উত্তর হলো, মার্কআপ ট্যাগের সমন্বয়ে গঠিত হয় এইচটিএমএল । তাই প্রকৃত অর্থে এটি কোনো প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ নয়, বরং একটি মার্কআপ ল্যাংগুয়েজ।

অনলইনে তথা ওয়েবসাইটে ওয়েবপেজ তৈরিতে এইচটিএমএল সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। এই ফাইলের এক্সটেনশন .html অথবা .htm উভয়ই হতে পারে। এতে বিভিন্ন এইচটিএমএল ট্যাগ ব্যবহার করে বিভিন্ন  ফরম্যাটিং, অবজেক্ট ও লিঙ্ক প্রকাশ করা করা হয়।

এইচটিএমএলের সর্বশেষ ভার্সন হলো HTML5, যেটির উন্নয়ন কাজ এখন সম্পূর্ণ এবং নতুন আদর্শমান ।

একনজরে এইচটিএমএল ভার্সনসমূহ:

ভার্সন সন
এইচটিএমএল ১৯৯১
এইচটিএমএল(২.০) ১৯৯৫
এইচটিএমএল(৩.২) ১৯৯৭
এইচটিএমএল(৪.০১) ১৯৯৯
এক্সএইচটিএমএল ২০০০
এইচটিএমএল(৫) ২০১৪


এইচটিএমএল ৫ এর আপডেট সংস্করণ ৫.১ এসেছে ২০১৭ সালে এবং ৫.২ এসেছে ২০১৭ সালে।


এইচটিএমএল (HTML) এর ইতিহাস

ব্রিটিশ কম্পিউটার বিজ্ঞানী টিম বার্নার্স-লি ১৯৮০ সালে সার্নের একজন ঠিকাদার ছিলেন। এরপর ১৯৮৯ সালে তিনি একটি ইন্টারনেটভিত্তিক হাইপারটেক্সট সিস্টেম প্রস্তাবে একটি মেমো লেখেন।১৯৯০ সালে তিনি ব্রাউজার ও সার্ভারের সফটওয়্যারে এইচটিএমএলের (HTML) উল্লেখ করেন ।

ওই বছরেই বার্নার্স-লি ও সার্নের তথ্য সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার রবার্ট কিলিয়াউ যৌথভাবে সার্নকে এ প্রকল্পের জন্য অর্থায়নের অনুরোধ করেন। তবে প্রকল্পটি আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন দেয়নি সার্ন।

১৯৯০ সালের দিকে এনসিএসএর ডেভলপ করা মোজাইক ব্রাউজারের মাধ্যমে এইচটিএমএল পরিচিতি লাভ করে। ১৯৯৭ সালের জানুয়ারিতে ডব্লিউসি৩ কর্তৃক প্রথম ডেভলপ করা এইচটিএমএল ৩.২ প্রকাশিত হয়।

একই বছরে শেষে ডিসেম্বরে ডব্লিউসি৩ এইচটিএমএল এর নতুন সংস্করণ এইচটিএমএল ৪,৩ প্রকাশ করে। ২০১০ সালে বর্তমানে প্রচলিত সর্বশেষ ভার্সন এইচটিএমএল জনসম্মুখে পরিচিতি লাভ করে।

 এইচটিএমএল শিখতে হলে কি জানতে হবে?

নতুন অনেকেই মনে করেন এইচটিএমএল শিখতে হলে গণিত জানতে হবে ভালো। এই ধারণা ঠিক নয় এইচটিএমএল লেখার জন্য তেমন কিছুই জানতে হবে না। শুধু লেখার আগ্রহ থাকলেই হবে। এটি শিখার জন্য উচ্চ কনফিগারেশনের কম্পিউটারেরও প্রয়োজন হয় না। সাধারণ মানের একটি কম্পিউটার ব্যবহার করেই এইচটিএমএল শিখে ফেলা যাবে।

কোন সফটওয়্যার লাগবে এইচটিএমএলের কোড লিখতে?

মজার ব্যাপার হলো এইচটিএমএলের কোড লিখতে আলাদা কোনো ভারি সফটওয়্যারের প্রয়োজন নেই। কম্পিউটার থাকা ডিফল্ট নোটপ্যাডেই এইচটিএমএল কোড লিখে রান করে দেখে নেয়া যাবে।

তবে কিছু সফটওয়্যার ব্যবহার করে আরও দ্রুত কোড লেখা ও কোড গুছিয়ে লেখা যায়। তেমনি কয়েকটি সফটওয়্যার হলো নোটপ্যাড প্লাসপ্লাস, সাবলাইম টেক্সট, নেটবিনস ইত্যাদি। তবে ভিএস কোড এডিটর বেশ জনপ্রিয়। আমি আমার টিউটোরিয়ালগুলোতে ভিএস কোড এডিটর ব্যবহার করব।

আগামী পর্বে আমরা আমাদের প্রথম ওয়েবসাইট তৈরি করব। এইচটিএমএল নিয়ে কোন প্রশ্ন থাকলে মন্তব্যে জানাতে ভুলবেন না।

বন্ধুদের জানিয়ে দেন
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments